সারাদেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আজ
প্রকাশিত : ১০:০৪, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

ছয় দফা দাবিতে আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের ফেসবুক পেজে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, পূর্বের দেওয়া সব নির্দেশনা বহাল রেখে সারাদেশে একযোগে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
প্রথমত, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত এই কোটা বাতিলের রায় বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা এবং ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল করে বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবি তোলা হয়।
দ্বিতীয়ত, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্মত কারিকুলাম চালু এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে রূপান্তরের দাবি জানানো হয়েছে।
তৃতীয়ত, উপসহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সরকারি ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে তাদের নিচু পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
চতুর্থ দাবিতে উল্লেখ করা হয়, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানানো হয়।
পঞ্চম দাবি অনুযায়ী, একটি স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের কথা বলা হয়েছে।
ষষ্ঠ ও শেষ দাবিতে, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) তাদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস চালুর মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রায় চার লাখ পলিটেকনিক শিক্ষার্থী। শুরুতে তারা স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করলেও গত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনের নতুন ধাপে প্রবেশ করে।
একই দিনে দেশজুড়ে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করায় আন্দোলনটি দেশব্যাপী আলোচনায় আসে।
গত ২২ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সেদিন রাতে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণাও দেন তারা।
তবে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি জানিয়ে পরদিন ২৩ এপ্রিল আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এএইচ
আরও পড়ুন